বুধবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৮

অর্হণা: পাণ্ডুলিপি আলাচনা / হায়াৎ মামুদ

পেশাগত কারণে আমাকে প্রতিবছর বিভিন্ন লেখকের বিভিন্ন প্রকৃতির অনেক গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি দেখতে হয়, পড়তে
হয়।তন্মধ্যে কিছু পাণ্ডুলিপি-পাঠ বিরক্তিকর, কিছু হাস্যকর আবার কিছু সুখকর আনন্দদায়ক। সংখ্যায় খুব কম হলেও মাঝে মাঝে এমন কিছু পাণ্ডুলিপি পাই, যা পড়ে হতবাক হয়ে যেতে হয়। আনন্দে অভিভূত হয়ে যেতে হয়। এরূপ হতবাক করা একটা পাণ্ডুলিপিঅর্হণা এটি পড়ে ক্ষোভ, আনন্দ, হাসি, কান্না, উচ্ছ্বাস, ভালোবাসা, উত্তেজনা এবং বহুমুখী প্রত্যাশায় অভিভূত হয়ে ড়েছিলাম। এমন পরিপূর্ণ পাণ্ডুলিপি আগের মতো এখনও বেশ দুর্লভ

অর্হণা, . মোহাম্মদ আমীন-এর লেখা উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি। পাণ্ডুলিপিটি, আমার বয়স ত্রিশ বছর কমিয়ে দিয়েছিল। পড়তে পড়তে আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম বিংশ শতকের সত্তরের দশকে। আমার বর্তমান অবস্থানকে ভুলিয়ে দিয়েছিল উপন্যাসটির বৈচিত্র্যময় পরম্পরা। এমন অলৌকিক কাণ্ড যে উপন্যাস ঘটাতে পারে, সেটি কত আকর্ষণীয় এবং আত্মহরি হতে পারে তা সহজে অনুমেয়। আমি ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে আমি যত পাণ্ডুলিপি পড়েছি, তন্মধ্যেঅর্হণাযে কোনো বিবেচনায় নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ। শ্রেষ্ঠত্বের অনেকগুলি কারণ আছে। আগে একটা বলেছি। আমি মনে করি, অর্হণাযিনিই পড়বেন, তাঁর কাছেই ভালো লাগবে, অভিভূত হবেন কারুময় সৌন্দর্য। এটি অর্হণা পাণ্ডুলিপিটাকে শ্রেষ্ঠ মনে হওয়ার অন্যতম কারণ

ঘটনা, খ্যাতিমান চরিত্রবর্গ, চরিত্রসমূহের সরব উপস্থিতি, রাজসিক আলোচনায় সর্বজনীন হিত, সাড়ম্বর দৃশ্যপট, দৃশ্যপটের মনোহর নৈসর্গিকতায় শহুরে বিমোহন, দলিতদের প্রতি মমতা, কিছু স্পর্শকাতর সম্পর্ক, হৃদয় আলোড়িত কথোপকথন, বুদ্ধিমত্তার অপূর্ব নিদর্শনপ্রসূত দার্শনিক উপলব্ধি, মনোবৃত্তিক উদারতায় হৃদয়ভিত্তিক জটিলতার স্বরূপ, প্রেম-ভালোবাসার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিউরে তোলা পরিঘটনার পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ প্রভৃতি আমাকে প্রবলভাবে মুগ্ধ করেছে।অর্হণা যিনিই পড়ুন, মুগ্ধ হবেন, অভিভূত হবেন সোল্লাস প্রাপ্তির মাদকীয় ভাবনায়আমি কামনা করি বা না- করি, উপন্যাসটি যোগ্যতাবলে পাঠকের হৃদয়ে নিজের অাসনটি গেড়ে নিতে সক্ষম হবে। আমি মনে করি, কালক্রমে . মোহাম্মদ আমীনের অর্হণাবাংলা সাহিত্যের অর্হণা হয়ে সবার মনে সাড়া দিতে সক্ষম হবে

[অর্হণা পাণ্ডুলিপি আলোচনা, লেখক : হায়াৎ মামুদ।]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন